রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যে সব খাবার খাবেন

খাদ্যের কাজগুলোর মধ্যে একটা কাজ হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা রক্ষা করা। খাদ্যের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। ফলে তা বহিরাগত শত্রুর বিরুদ্ধে কাজ করে শরীরকে সুস্থ রাখে। করোনা মহামারিতে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি খুব গুরুত্ব পেয়েছে। বর্তমান সময়ে অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠেছেন, অনেকে বর্তমানে আক্রান্ত; আবার এখনো পর্যন্ত আক্রান্ত হননি, এমন মানুষও রয়েছেন। প্রত্যেকের জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী রাখা খুব জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বজায় রাখার পরামর্শ সবাইকে দেওয়া হয়। শুধু করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নয়, যেকোনো রোগের বিরুদ্ধে শরীরকে ফিট রাখতে সঠিক পুষ্টি অনেক জরুরি। সুষম খাবার এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে থাকে। মনে রাখবেন, ভুল ডায়েট, অপরিমিত খাবার, অতিরিক্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, সঠিক সময়ে না খাওয়া, পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া, অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড খাওয়া, ব্যায়াম না করা, অপরিমিত ঘুম ইত্যাদি কারণে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। ইন্টারনেট দেখে একটিদুটি ভালো খাবার, সাপ্লিমেন্ট খাওয়া, ডি টক্স ওটার খাওয়াএগুলো করে দীর্ঘমেয়াদি সুফল পাওয়া যায় না।সব খাবারের মধ্যেই রয়েছে নানা গুণ। বিজ্ঞানমতে, বিভিন্ন ধরনের খাবার নির্দিষ্ট পরিমাণে বয়স, উচ্চতা, ওজন ও রোগভেদে খেলে মানুষ সুস্থ থাকে। এই সময়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করতে খাবার গ্রহণের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নিয়মাবলি মেনে চলা উচিত।বয়স, উচ্চতা, ওজন ও রোগভেদে খেলে মানুষ সুস্থ থাকে। এই সময়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করতে খাবার গ্রহণের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নিয়মাবলি মেনে চলা উচিত।

ফল ও শাকসবজি

ফল ও শাকসবজি হলো ভিটামিন ও মিনারেলের প্রধান উৎস। ভিটামিন ও মিনারেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো। তাই ছোট–বড় সবাইকে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই ফল ও সবজি থাকতে হবে। সালাদ, জুস, স্মুদি, ডেজার্ট, স্যুপ, তরকারি, ফলের সালাদ ছাড়াও নানা উপয়ে ফল ও সবজি খাওয়া সম্ভব।ফলের ভিটামিন সি, বিশেষ করে টকজাতীয় ফলের ভিটামিন সি শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। লেবু, আমলকী, মালটা, কমলা, আনারস, জাম্বুরা ইত্যাদি ফলে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে।তাই রোজ এই খাবারগুলো ভিটামিন সির চাহিদা পূরণ করে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা উন্নত করে।লাল ও কমলা রঙের সবজি, যেমন লাল ক্যাপসিকাম, গাজর, টমেটো ইত্যাদি থেকে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি পাওয়া যায়।এই দুই প্রকার ভিটামিন যথেষ্ট প্রয়োজন রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে।গাঢ় সবুজ সবজি, বিশেষ করে ব্রকলি, পালংশাক ইত্যাদিতে প্রচুর ভিটামিন সি, ই ও এ পাওয়া যায়; যা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যে সব খাবার খাবেন

photo credit by:


প্রোটিন

র্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে প্রোটিনজাতীয় খাবার থেকে প্রাপ্ত জিংক, সেলেনিয়াম, ভিটামিন ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে মাছ, মাংস, দুধ ডিম প্রোটিনের ভালো উৎস বাদামের ভিটামিন শক্তিশালী দুধ দইয়ে রয়েছে জিংক ভিটামিন ডি; যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে

হার্বস মসলা

আদা রসুনের অনেক গুণঅ্যান্টিইনফ্লামেশন কমাতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে তুলসীপাতা, তিল, হলুদ কালিজিরা প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির অনুঘটক ওপরে উল্লিখিত খাদ্য উপকরণগুলো রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির সহায়ক শুধু এগুলো খেলেই চলবে না একটি পুষ্টি উপাদান আরেকটি পুষ্টি উপাদানের সঙ্গে জড়িত তাই রোগ প্রতিরোধক্ষমতার বৃদ্ধির জন্য সুষম খাবার নিয়মিত খাওয়া প্রয়োজন এর সঙ্গে অবশ্যই রয়েছে রুটিন অনুসৃত প্রাত্যহিকী

জিংকযুক্ত খাবার

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে জিংকের ভূমিকা অপরিসীম দুধ দুগ্ধজাত খাবার, মাংস, বাদাম প্রভৃতি জিংকের উৎস প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় জিংকযুক্ত খাবার রাখা উচিত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যে সব খাবার খাবেন

প্রয়োজন ভালো ঘুম

সুষম খাবার গ্রহণের পাশাপাশি নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘুম ভীষণ জরুরি রোজ রাতে আট ঘণ্টা ঘুম শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কার্যকর সুস্থ রাখতে সাহায্য করেসেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধেও বিশেষ ভূমিকা রাখে ঘুম

চিন্তামুক্ত থাকা

ইতিবাচক চিন্তা মনকে প্রফুল্ল রাখেআর চিন্তামুক্ত মন শরীরকে সুস্থ রাখে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে মানসিক শান্তি খুবই জরুরি ইতিবাচক চিন্তা মনকে প্রফুল্ল রাখে আর চিন্তামুক্ত মন শরীরকে সুস্থ রাখেরোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে মানসিক শান্তি খুবই জরুরি

ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার পরিহার করা

ট্রান্স ফ্যাট যুক্ত খাবার যেমন ভাজাপোড়া, ফাস্ট ফুড, জাংকফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার বেকারির খাদ্যসামগ্রী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারেতাই এসব খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলা উচিত

সুস্থ থাকতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই

রোজ ব্যয়াম করা, হাঁটা, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটার অভ্যাস শরীরকে সুস্থ নীরোগ রাখেনীরোগ শরীর রোগ প্রতিরোধে সক্ষমতাই নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে ভারসাম্যহীন ডায়েট থেকে বিরত থাকা ক্রাশ ডায়েট বা ভারসাম্যহীন ডায়েট থেকে বিরত থাকুনদীর্ঘ সময় কার্বোহাইড্রেট না খাওয়া বা কোনো মেজর পুষ্টি উপাদান না খেলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়

বদভ্যাস ত্যাগ করা

ধূমপান, মদ্যপান, জর্দা, তামাক বা নেশা হয়এমন সব উপাদান গ্রহণে বিরত থাকা সব সময়ই জরুরি আর এখন তো কথাই নেইকারণ রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাসে নেশাসামগ্রী বিশেষ ভূমিকা রাখে বলে রাখা ভালো, কিছু পদ আছে, যেগুলো প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট জোগাতে সহায়তা করেফলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়যেমন মাশরুম স্যুপ, চিকেন ভেজিটেবল স্যুপ, রঙিন সালাদ, সবজি খিচুড়ি, সবজি আর মুরগির মাংস দিয়ে তৈরি যেকোনো পদ, আর বিভিন্ন ধরনের ফল দিয়ে তৈরি পদ

পরিশেষে উল্লেখ করা প্রয়োজন, সুস্থ সুন্দর জীবনের জন্য রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে শরীরের শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকা অনেক জরুরি তাই সঠিক সুস্থ জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় নিয়ম মেনে চলে শরীরকে নীরোগ রাখতে হবে বিশেষত চলমান এই করোনা মহামারির সময়ে সংক্রমণ মোকাবিলায় আবশ্যক উপযুক্ত রোগ প্রতিরোধক্ষমতা করোনা মহামারির সময়ে সংক্রমণ মোকাবিলায় আবশ্যক উপযুক্ত রোগ প্রতিরোধক্ষমতা



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url